বন্দী মুক্তি নিয়ে বিবাদ মিটছে না, আফগানিস্তানে লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়ছে

আফগানিস্তানে সরকারী বাহিনী এবং তালেবান গেরিলাদের মধ্যে নতুন করে সঙ্ঘটিত সঙ্ঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েক ডজন যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বন্দী বিনিময় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদের মীমাংসা না হওয়ার কারণে এই সঙ্ঘাতের মাত্রা বেড়ে গেছে। ফলে সেখানে যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে রাজনৈতিক সমাধান নিয়ে আসার জন্য আফগান-অভ্যন্তরীণ সংলাপ শুরুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যে প্রচেষ্টা চলছে, সেটা বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ মঙ্গলবার বলেছে যে, দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার ও জাবুল প্রদেশে তালেবানদের রাত্রিকালিন হামলাকে নিরাপত্তা বাহিনী নস্যাৎ করে দিয়েছে এবং এই সঙ্ঘর্ষে প্রায় ৫০ গেরিলা নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ৮৪৫ আফগান বন্দীকে মুক্ত দিয়েছে তালেবান, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চুক্তির প্রতি পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
এদিকে, তালেবানরা জানিয়েছে যে, সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় ওয়ারদাক প্রদেশে আফগান ন্যাশনাল আর্মির বহরের কাছে একটি মিনি ট্রাক ভর্তি বিস্ফোরক নিয়ে তাদের এক আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তারা দাবি করেছে যে, শক্তিশালী ওই বিস্ফোরণে প্রায় ৫০ সেনা নিহত হয়েছে।
আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সায়েদ আবাদ জেলার ওই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও জানিয়েছে যে, হামলায় আট সেনা নিহত এবং নয়জন আহত হয়েছে।
এদিকে, তালেবানরা মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে যে, কাবুল সরকারের সাথে বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তারা আরও ১৬ আফগান সেনাকে মুক্তি দিয়েছে। তারা বলেছে যে, প্রতিশ্রুত ১০০০ জনের মধ্যে ৮৬১ জনকে মুক্তি দিয়েছে তারা।
ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তালেবানদের যে চুক্তি হয়, সেখানে বন্দী বিনিময়ের ব্যাপারে উভয়েই সম্মত হয়। আফগানিস্তানে দীর্ঘদিনের সঙ্ঘাতের অবসানের জন্য ওই চুক্তি করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, আফগান কর্তৃপক্ষকে ৫০০০ তালেবান বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। এ পর্যন্ত তারা ৪,৪০০ জনকে মুক্তি দিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ আন্ত:আফগান আলোচনা শুরুর আগে হামলা বন্ধ হবে না: তালেবান
আফগান সরকার শেষের ৬০০ তালেবান বন্দীদের মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সে কারণে বহুল প্রতীক্ষিত আফগান-অভ্যন্তরীণ আলোচনা এখনও শুরু হতে পারছে না। মার্চ মাসে এই আলোচনা শুরুর কথা ছিল।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আফগান প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সেদিক সেদিকি আবার জোর দিয়ে বলেছেন যে, যে সব বন্দীরা ‘মারাত্মক অপরাধ’ করেছে এবং নিরপরাধ আফগানদের হত্যা করেছে, তাদেরকে মুক্তি দেয়া যাবে না। তাছাড়া তালেবানদের সাথে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় মার্কিন-তালেবান চুক্তি লঙ্ঘিত হচ্ছে – এমন অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন তিনি।
এদিকে তালেবান নেতা মোহাম্মদ নবি ওমারি – ওয়াশিংটনের সাথে দর কষাকষির আলোচনাতেও যিনি অংশ নিয়েছিলেন – তিনি কাবুলের বক্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়ে বাকি বন্দীদের বিরুদ্ধে সরকারী অভিযোগকে জোরালোভাবে নাকচ করে দেন।