আমরা লাইভে English বুধবার, জুন ০৭, ২০২৩

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা যাচ্ছে দিল্লিতে

১৮ দেশে হবে মৈত্রী দিবসের যৌথ আয়োজন

303215_bdva

শেষ সময়ে এসে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত ‘মৈত্রী’ বা ‘বন্ধুত্ব’ দিবসের অনুষ্ঠানে। এবারই প্রথম দুই রাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মতে, ঢাকা ও দিল্লির পাশাপাশি বিশ্বের ১৮ দেশের রাজধানী শহরে মৈত্রী দিবস (৬ই ডিসেম্বর) যৌথভাবে উদ্যাপিত হচ্ছে। এইদিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঐতিহাসিক স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত। ঢাকা ও নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সূত্র বলছে, নানা কারণে মৈত্রী দিবসের বর্ণাঢ্য আয়োজনগুলোতে কাটছাঁট করতে হচ্ছে। ওই দিবসকে স্মরণে ভারতের প্রাচীনতম থিংক ট্যাংক ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে, যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানাকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে তার সশরীরে অংশগ্রহণ এবং বক্তৃতা করার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি অনুষ্ঠানটিতে যোগ দিচ্ছে না বলে জানা গেছে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও বার্তা পাঠানো হবে বলে নিশ্চিত করেছে সেগুনবাগিচা।

১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদেশ বিষয়ক ভারতের প্রথম থিংক ট্যাংক ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স’-এর আয়োজন ছাড়াও নয়াদিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন পৃথক সেলিব্রেশনের আয়োজন করছে। আর ঢাকায় বন্ধু দিবসের বর্ণাঢ্য উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় হাইকমিশন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বের যে ১৮টি দেশের রাজধানীতে যৌথ উদ্যাপনের প্রস্তুতি চলছে তার মধ্যে ১০টিতে লিড বা মূল আয়োজক হচ্ছে বাংলাদেশ। আর বাকি ৮টিতে সমুদয় আয়োজনের দায়িত্ব নিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ যে ১০ দেশে অনুষ্ঠান আয়োজনের মূল দায়িত্বে রয়েছে তা হলো- যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং থাইল্যান্ড। আর অনুষ্ঠান আয়োজনে ভারত লিডে থাকছে বৃটেন, রাশিয়া, কানাডা, বেলজিয়াম, ইন্দোনেশিয়া, কাতার, মিশর এবং সিঙ্গাপুরে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, হোস্ট কান্ট্রির আপডেট করা করোনা বিধিনিষেধ বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠান আয়োজনে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ অনুষ্ঠান আয়োজন করছে এমন ১০ দেশে ঢাকা থেকে কালচারাল ডেলিগেশন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৭টি দেশেই ডেলিগেশন পাঠানো যাচ্ছে না করোনার বিধিনিষেধের কারণে। যার অন্যতম হচ্ছে থাইল্যান্ড। দেশটির সরকারের তরফে যৌথ আয়োজনে ৫০ জনের বেশি অতিথি জড়ো না করার অনুরোধ করা হয়েছে। বাকি যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা- ওই ৬ দেশে অনুষ্ঠান সীমিত করার নির্দেশনা রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রোববার সন্ধ্যায় মানবজমিনকে বলেন, করোনা একটা বড় সংকট। এটা সব ওলটপালট করে দিয়েছে। তবে বড় বিষয় হচ্ছে পরিকল্পনায় থাকা ১৮টি দেশেই বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবসের যৌথ অনুষ্ঠান হচ্ছে। কোথাও অনুষ্ঠান বন্ধ করতে হয়নি। সবখানেই উভয় দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকছেন। সৌদি আরব, ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ডে আমরা ঢাকা থেকে কালচারাল টিম পাঠাতে পারছি। ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবেশী দুই ঘনিষ্ঠ রাষ্ট্র বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এখন সোনালি অধ্যায় চলছে। দু’দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতার মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ এবং সফর চলমান রয়েছে। বন্ধু দিবসের অনুষ্ঠানের পরপরই ১৬ই ডিসেম্বরে বিজয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে যোগ দিতে ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ ঢাকা সফর করবেন। তাছাড়া জানুয়ারিতে ভারতের ৭৩তম প্রজাতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশের শীর্ষ পর্যায়ের সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত মার্চে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ঢাকা সফর করেন।