আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মার্চ ২৮, ২০২৩

যৌথ বিনিয়োগে সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ-চীন

235607kalerkantho-ib-2

বাংলাদেশের সস্তা শ্রম এবং বিশ্বের বড় বড় বাজারে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধার ফলে চীন ও বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগে বিপুল সম্ভাবনা দেখছে। দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধিরা গতকাল সোমবার বাংলাদেশ চীন বিনিয়োগ সম্মেলনে এই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক এবং বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) যৌথভাবে এই আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

আলোচনায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো জোরদার করতে চায়। চীনের কাছে আরো বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যে যৌথ বিনিয়োগের বড় সুযোগ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের শ্রমিককরা দক্ষ এবং সংখ্যায় প্রচুর। অন্য দেশের তুলনায় এখনো সস্তায় শ্রম পাওয়া যাচ্ছে। আবার বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে চীন প্রযুক্তিতে এগিয়ে আছে। এই দুই শক্তি মিলে যৌথ বিনিয়োগে পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্ববাণিজ্যে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ।’

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের ৩৮টি দেশে শুল্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পায় বাংলাদেশ। উদার বিনিয়োগ নীতির ফলে বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে উদ্যোক্তাদের। প্রায় সব খাতেই বিদেশি বিনিয়োগ উন্মুক্ত। ইজেডগুলোতে অবকাশ সুবিধাসহ সেবা পাওয়া যাচ্ছে কম মূল্যে। সহজে ব্যবসা সূচকের উন্নয়নেও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এসংক্রান্ত আগামী প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান সন্তোষজনক হবে। এসব বিবেচনায় এ দেশে দুই দেশের যৌথ বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাস্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। ২০৪১ সালে এ দেশটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। উন্নয়নের এই গতিধারার কারণে চীনা উদ্যোক্তাদের কাছে এ দেশটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।’ বাণিজ্য বিনিয়োগের তথ্য জানিয়ে চীনে ঢাকার রাষ্ট্রদূত মাহবুব-উজ-জামান বলেন, ‘বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) শীর্ষে চীনা উদ্যেক্তারা। সর্বশেষ হিসেবে তা ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। চীনা এফডিআইআইয়ের আরো সম্ভাবনা আছে।’ এসব বিবেচনায় চীনা উদ্যোক্তাদের জন্য ডেডিকেটেড (স্বতন্ত্র) একটি ডেস্ক গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি। 

মুল প্রবন্ধে বাংলাদেশ কেন চীনা উদ্যোক্তাদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান সে সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম। বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলে (এসইজেড) চীনা উদ্যোক্তাদের আরো বিনিয়োগে আহ্বান জানান বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে চীনা জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক খাতে বিনিয়োগের মাধ্যম  দেশীয়, আঞ্চলিক ও বিশ্ববাজার থেকে সুবিধা নিতে পারে দুই দেশ। তথ্য-প্রযুক্তি, কৃষিজশিল্প, নির্মাণসহ কয়েকটি খাতের কথা উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশে চীনা অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লেই ওয়াইকিয়াং বলেন, ‘এ দেশে সহজে ব্যবসা সূচকে উন্নয়নে আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী।’ চীনকেও বাংলাদেশের জন্য বিশাল সম্ভাবনার বড় বাজার হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।