আমরা লাইভে English সোমবার, জুন ০৫, ২০২৩

হিন্দুত্ববাদের সাথে রোমাঞ্চ

এখন আর কারো কাছে গোপন কিছু নয় যে বিজেপি ও মোদি ভারতজুড়ে হিন্দুত্বাদী দর্শন বাস্তবায়ন করতে চান এবং এ লক্ষ্যে যা করার সবকিছুই তারা করবে। দিল্লি এখন হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী ও ভারতীয় দেশপ্রেমিকদের মধ্যে ভাঙনের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর ফলে ভারতের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আর হিন্দুত্ববাদ কবর খুঁড়ে চলেছে গণতন্ত্রের প্রতি ভারতীয়দের রোমাঞ্চকে কবর দিতে।

বিশ্ব দেখছে যে বিজেপির টার্গেটে পরিণত হচ্ছে মুসিলমেরা। আর হিন্দু মৌলবাদীরা তাদের ওপর সব ভৌতিক নীতি চাপিয়ে দিচ্ছে। অথচ অনেক মুখ্যমন্ত্রী সিএবি বাস্তবায়ন করতে না চাইলেও বিজেপি সরকার তহবিল অনুমোদন করে সেটি বাস্তবায়ন করতে চাইছে।

ইতোমধ্যেই ক্ষতি হয়ে গেছে, যে বিভাজন হয়েছে তাতে করে ভারতকে দীর্ঘ মেয়াদে ভুগতে হবে। ভারতের ভিত্তিই নড়ে গেছে। অধিকন্তু বিভাজন কেবল হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যেই হয়নি, প্রতিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যেই ঘটেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও হিন্দুত্ববাদী বিজেপি থামার কোনো ইচ্ছা প্রদর্শন করছে না। তারা তাদের কাজে এগিয়েই যাবে।

অনেক মুখ্যমন্ত্রী যেখানে এনআরসি বাস্তবায়ন করতে অস্বীকার করছেন, সেখানে উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ বিক্ষোভকারীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার হুমকি দিয়ে আসছেন। বিক্ষোভকারীদের কারণে সম্পত্তির ক্ষতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এই নির্দেশ দিয়েছেন। এই যোগীই একসময় প্রকাশ্যে মুসলিমদেরকে ‘ভাইরাস’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

পরিস্থিতির উন্নতি না করে বিজেপি যা করতে চাইছে তা হলো নাগরিক সমাজকে নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিতে। সিএবির পক্ষে বড় বড় সভার আয়োজন করা হচ্ছে এবং বিজেপি তার শক্তি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে। আবার যেখানে সমস্যায় পড়ছে, সেখানেই বিজেপি পুলিশের সহায়তা গ্রহণ করছে। তাছাড়া বিভিন্ন স্থানে মুসলিমদের জন্য আটককেন্দ্রও নির্মাণ করা হচ্ছে।

মনে রাখতে হবে যে মোদি ও তার বাহিনী এখনো ভারত-অধিকৃত কাশ্মির থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করেনি। আবার যত প্রতিবাদই আসুক না কেন, তারা সিএবি থেকে সরে যাবে না। এতে বোঝা যাচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে ভারতে পরিস্থিতির কেবল অবনতিই ঘটবে। মোদি ও অমিত শাহ তাদের পথে চলতেই থাকবেন। বিজেপির লোভাতুর লক্ষ্যের শিকার হয়ে অনেকে বলি হবে। বিক্ষোভ দমনের আরেকটি পন্থা অবলম্বন করছে বিজেপি। সেটি হলো ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া। 

মোদি ও তার অনুসারীরা যে সব কাজ করছে তার দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়নি। এর ফলে বিজেপি উৎসাহিত হয়ে তাদের মুঠো আরো কঠিন করতে পারে। এখানেই শেষ নয়, তারা আবার পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে পরমাণু শক্তিধর দেশে পরিণত হওয়ার জন্য। তারা বলছে যে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র বিশ্বের জন্য হুমকি। কিন্তু বর্তমান পর্যায়ে যা বোঝা যাচ্ছে তাতে করে দক্ষিণ এশিয়া পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের আতঙ্কে থাকলেও তা আসলে ভারত ও মোদির পাগলামির কারণের ঝুঁকির মুখে থাকবে। 

ভারতের উচিত হবে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। মোদি যদি হিন্দুত্ববাদের সাথে রোমাঞ্চ অব্যাহত রাখেন, তাহলে শোক করার মতোও পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে না।