আমরা লাইভে English সোমবার, জুন ০৫, ২০২৩

দিল্লীর প্রতিবেশী পরিকল্পনা নষ্ট করতে পারে পারে বাংলা-ভারত সম্পর্কের টানাপড়েন: সাবেক বাংলাদেশী দূত

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় এটা দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদের মধ্যে ভারতের পরিকল্পনা নষ্ট করে দিতে পারে। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত বৃহস্পতিবার এ কথা বলেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তারিক করিম। তিনি ইঙ্গিত দেন যে, ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্সের (এনআরসি) কারণে ঢাকায় আওয়ামী লীগ সরকারের উপর অভ্যন্তরীণ চাপ ক্রমেই বাড়ছে।

নয়াদিল্লীতে থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানের ফাঁকে করিম দ্য হিন্দুকে বলেন, “ভারত-বাংলাদেশের উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা যদি ধসে পড়ে, তাহলে কোন আঞ্চলিক প্রকল্পই কার্যকর করা যাবে না। ভারত আর বাংলাদেশ সরকারের এই সহযোগিতামূলক সম্পর্কের কারণে বহু কিছু অর্জিত হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা একজন রাজনীতিবিদ এবং তার জনগণ তার সামনে ভারত নিয়ে যে সব প্রশ্ন তুলবে, সেগুলোর মোকাবেলা করতে হবে তাকে”।

বোধগম্য অসন্তোষ

করিম বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে একটা অসন্তোষের জন্ম নিয়েছে যেটা বোঝা যায় এবং সম্ভবত সে কারণেই সম্প্রতি আবু ধাবি সফরকালে ভারতের সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের সমালোচনা করেছেন তিনি। অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক বলেন, “তিনি মূলত প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরীণ আইনের সমালোচনা করেছেন কারণ তাকে জনগণের উদ্দেশে একটা বার্তা দিতে হয়েছে যারা এটার তীব্র সমালোচনা করছে”।

জানুয়ারিতে আবু ধাবিতে গালফ নিউজকে একটা সাক্ষাতকার দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যেখানে তিনি স্বীকার করেছেন যে, নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় কিন্তু এটাকে তিনি ‘অপ্রয়োজনীয়’ হিসেবে মন্তব্য করেন।

নয়াদিল্লীতে নিযুক্ত এই সাবেক হাইকমিশনার ২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারত কর্তৃক জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল এবং এনআরসি প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে বলেছিলেন যে, এর মাধ্যমে ‘দ্বিজাতী তত্ত্বকে’ সঠিক হিসেবে প্রমাণ করা হয়েছে, যেটার ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হয়েছিল।

সহযোগিতার আহ্বান

বৃহস্পতিবার তিনি পরিবহন ও সংযোগের জন্য বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল (বিবিআইএন) পদক্ষেপ, এবং বিমসটেকের মতো এ অঞ্চলের প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়নের জন্য এ অঞ্চলের সকল দেশের মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীতার কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, বিবিআইএন মোটর যান চুক্তি (এমভিএ) ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত হলেও এখনও সেটা বাস্তবায়ন করা যায়নি।

“বিবিআইএন যতটা সাফল্য দেখাতে পারবে, সেই একই অনুপাতে সফল হবে বিমসটেক। বিবিআইএনকে যদি আপনি সফল করতে না পারে, তাহলে বিমসটেকের অন্য তিনটি দেশ কেন এর সাথে যুক্ত হতে চাইবে”, এ কথা উল্লেখ করে করিম বলেন যে, আঞ্চলিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্র নীতি টিমের নজরে পড়েছে সেগুলো। বিবিআইএন দেশগুলো ছাড়াও শ্রীলংকা, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড বিমসটেকের সদস্য।