পরিবেশ সুরক্ষার বাধ্যতামূলক অনুমোদন ছাড়াই আসামে কূপ খনন করছে ভারতের তেল কোম্পানি

বাধ্যতামূলক অনুমোদন না নিয়েই ভারতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ব তেল অনুসন্ধানী ফার্ম সীমান্তবর্তী রাজ্য আসামে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের (এনজিটি) গঠিত একটি প্যানেল দেখতে পেয়েছে যে, বাগজান কূপের জন্য বায়োডাইভার্সিটি ইমপ্যাক্ট অ্যাসেস্টমেন্ট করার ব্যপারে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ থাকা সত্বেও কোন ধরণের জরিপ না করেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেঅয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড (অয়েল)।
এই কূপটির অবস্থান ডিবরু সাইখোয়া ন্যাশনাল পার্কের কাছে, যে পার্কটিতে ৩৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ৩৮২ প্রজাতির পাখি রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকগুলো বিপন্নপ্রায় প্রজাতিও রয়েছে। এনজিটি প্যানেল এই ফার্ম আর তার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে।
মে মাসে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত বিস্ফোরণে বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাস নিসৃত হওয়ার পর থেকেই কড়া নজরে রয়েছে বাগজান কূপটি। ৯ জুন এখানে আগুন লেগে তিনজনের মৃত্যু হয়। তাছাড়া অনেকগুলো পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে হয়। কূপের কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভ করে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে এবং কূপের মুখ বন্ধের দাবি জানিয়েছে, যাতে তারা নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিরে যেতে পারেন।
বেশ কিছু আইনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যে, কাজ শুরুর আগে তেল অনুসন্ধান ফার্মগুলোকে অবশ্যই অনুমোদন নিতে হবে। এই আইনগুলোর মধ্যে রয়েছে এয়ার (প্রিভেনশান অ্যান্ড কন্ট্রোল অব পলিউশান) অ্যাক্ট, ওয়াটার (প্রিভেনশান অ্যাণ্ড কন্ট্রোল অব পলিউশান) অ্যাক্ট, এবং হ্যাজার্ডাস ওয়েস্ট (ম্যানেজমেন্ট অ্যাণ্ড হ্যাণ্ডেলিং) রুলস, এবং হ্যাজার্ডাস অ্যান্ড আদার ওয়েস্টস (ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সবাউন্ডারি মুভমেন্ট) রুলস।
প্যানেল তাদের অনুসন্ধানে দেখেছে যে, ওয়েল তাদের কাজ শুরুর আগে বাধ্যতামূলক অনুমোদন নেয়নি। তাছাড়া অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে যে, বিস্ফোরণের পরে কূপের সংশ্লিষ্ট্র এলাকাগুলোতে শব্দ দুষণের মাত্রা অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি রয়েছে।
ওয়েলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছেযাতে তারা শব্দ দুষণের মাত্রা কমায়, কূপের আশেপাশের মানুষদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়। আগামী মাসে এই প্যানেল এনজিটির কাছে চুড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেবে।
ওয়েল মুখপাত্র ত্রিদিব হাজারিকাকে উদ্ধৃত করে মিডিয়া জানিয়েছে, তিনি বলেছেন যে, চুড়ান্ত রিপোর্ট জমার পর বিবৃতি দেয়া হবে। ফার্মের দেয়া একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য এরই মধ্যে ৩৬৯ মিলিয়ন ভারতীয় রুপি বিতরণ করা হয়েছে।