আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মে ৩০, ২০২৩

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ঢাকা-ওয়াশিংটন দ্বিমত

692ae6bcf5c5d9c5e9ae4521c474179f-5d15bb523409d-330d124f98e3af057a134744eb57451f

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে দুই দেশের সম্পর্ক আরও কিভাবে উন্নত করা যায় এবং আগামী ৫০ বছরের পথ চলা আরও কিভাবে মসৃণ করা যায় তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আবার একই সঙ্গে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে সব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একমত হয়নি বাংলাদেশ। নিজের স্বার্থ বজায় রেখে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করতে চায় ঢাকা—এই বার্তাই দিয়েছেন তারা।

সোমবার পররাষ্ট্র সচিব যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে যে, আমরা যেমন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চাই এবং তারাও আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী এবং প্রতিটা বৈঠকে তারা খুব সিরিয়াসলি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে যে চিঠি বিনিময় হয়েছে সেখানেও  বার্তাটি পরিষ্কার বলে তিনি জানান।

দুই দেশের সম্পর্ক গত ৫০ বছরে যেমন উন্নত হয়েছে এবং আগামী ৫০ বছরের সম্পর্ক যেন একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করে—এভাবেই আমাদের শীর্ষ নেতারা দেখতে চান। সেটিকে ভিত্তি ধরে আমাদের কাজ ছিল দুই দেশের সম্পর্ক কোথায় এবং কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা এবং সেটি আমরা করেছি বলে তিনি জানান।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরম্যানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল এটি একটি পনের-বিশ মিনিটের সৌজন্য সাক্ষাৎ হবে। কিন্তু বৈঠকটি এক ঘণ্টার বেশি হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক ফরম্যাটে হয়েছে এবং সেখানে আলোচনা হয়েছে প্রতিটি ইস্যু নিয়ে। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে তারা আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে অত্যন্ত সিরিয়াস এবং আমরাও সিরিয়াস।’

তিনি বলেন, চলার পথে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা থাকবে এবং সেগুলোকে কিভাবে ম্যানেজ করবো,  সেটাই আমরা এখন দেখছি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার এবং এ বিষয়ে তারা সব দেশের সহযোগিতা চেয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে অপারগতা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্পষ্ট অবস্থান রয়েছে। জাতিসংঘের যে তিনটি ভোট হয়েছে সেটার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি এবং আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি যে রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক সেটির আলোকেই আমরা আমাদের অবস্থান নিয়েছি এবং রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অনেক বেশি। সুতরাং কেউ চাইলেই এটি এডজাস্ট করা আমাদের জন্য কঠিন।’

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমাদের যে স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো রয়েছে—যেমন রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প এটি নিয়ে কেউ যদি বলে যে, এটি করো না, সেটি হবে না। আমরা বলেছি, আমাদের যে অগ্রাধিকারগুলো রয়েছে সেটি আমাদেরকে শেষ করতে দাও এবং তারপরে বাকিটা যখন সময় আসবে তখন দেখা যাবে।’

তিনি বলেন, সব দেশের সঙ্গেই আমরা একটি ভালো অবস্থান রাখতে চাই এবং আমরা বলেছি যে—দুই দেশের মধ্যে যদি সম্পর্ক খারাপ হয়, তাহলে ওই দুই দেশের সঙ্গে আমাদের যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে সেটি যেন ব্যাহত না হয়, সেটার বিষয় তাদেরকে আমরা ইঙ্গিত দিয়েছি।’