উদ্ধারকারীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে উপদ্রুত এলাকা একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ে ঠিক কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই পরিমাপ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
দেশটিতে ঘূর্ণিঝড়ের পর এখন ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
ফিলিপাইন রেডক্রসের চেয়ারম্যান রিচার্ড গর্ডন বিবিসিকে বলেন, অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। পানির সংকট প্রকট। বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল ও কমিউনিটি বাড়িগুলো ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।
রিচার্ড গর্ডন বিবিসিকে বলেন, এমন কিছু এলাকা আছে, যেগুলো দেখে মনে হয়, সেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও ভয়ানক বোমা হামলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ে অসংখ্য বাড়ির চালা উড়ে গেছে। গাছ উপড়ে পড়েছে। কংক্রিটের তৈরি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। কাঠের ঘর ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি দীর্ঘমেয়াদি ত্রাণ প্রচেষ্টায় অর্থায়নের জন্য ২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চেয়ে জরুরি আবেদন জানানো শুরু করেছে।

রিচার্ড গর্ডন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে যাঁরা সবকিছু হারিয়েছেন, তাঁদের জরুরি সাহায্য দিচ্ছেন ঘটনাস্থলে থাকা স্বেচ্ছাসেবকেরা।
অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে সহায়তার জন্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোয় সেনাবাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের হাজারো কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত এলাকায় খাদ্য, পানি, চিকিৎসাসামগ্রীসহ কোস্টগার্ডের পাশাপাশি নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠানো হয়েছে। তারা সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ফিলিপাইনে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে রাইকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
রাইয়ের ভয়াবহতা ২০১৩ সালে দেশটিতে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হাইয়ানের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
হাইয়ানকে ফিলিপাইনে এযাবৎকালে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। এ ঘূর্ণিঝড়ে ৭ হাজার ৩০০-এর বেশি মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর একটি ফিলিপাইন। দেশটিতে প্রতিবছর গড়ে ২০টি ঝড় আঘাত হানে।