আমরা লাইভে English বৃহস্পতিবার, মার্চ ৩০, ২০২৩

বকেয়া বেতনের দাবির কারণে বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের আটক করেছে মালদ্বীপ

HUMAN RIGHTS-ENG-27-07-2020

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ শনিবার মালদ্বীপ সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে যাতে তারা ৮০ জন অভিবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেয়। এই অভিবাসীরা তাদের বকেয়া বেতনের দাবি জানিয়েছিল। 

নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক গ্রুপটি বলেছে, অমানবিক পরিবেশে বসবাস এবং বেতন ছাড়া কাজ করানোর বিরুদ্ধে আলাদা আলাদা বিক্ষোভ করার সময় এই বিদেশী শ্রমিকদেরকে আটক করে কর্তৃপক্ষ। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, “কর্তৃপক্ষের উচিত আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে তাদেরকে মুক্তি দেয়া, যাদেরকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের কারণে আটক করা হয়েছে। তাদের উচিত মানব পাচার এবং অন্যান্য অভিযোগগুলোর দিকে নজর দেয়া…”।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্মাণ খাতের শ্রমিকদেরকে এমনকি মার্চ মাসে লকডাউনে যাওয়ার আগেও তাদের মজুরি দেয়া হয়নি। ফলে মে মাসে বিক্ষিপ্ত সঙ্ঘর্ষের সূত্রপাত হয়। 

বাংলাদেশী শ্রমিক মোহাম্মদ মহসিন এএফপিকে টেলিফোনে বলেন যে, দুই সপ্তাহ আগে পুলিশের সাথে সঙ্ঘর্ষ শুরু হয়েছে, কারণ ছয় মাস তাদেরকে কোন বেতন দেয়া হয়নি। 

মহসিন বলেন, “দেশে আমাদের পরিবার ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে এবং ঋণদাতাতের খপ্পরে পড়েছে তারা”। অনেকেই বাংলাদেশ থেকে ঋণ নিয়ে কাজের আশায় মালদ্বীপে এসেছেন, যাদের আশা ছিল এখানে ভালো রোজগার করতে পারবে তারা। 

পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, তারা ১৩ জুলাই রাজধানীর উপকণ্ঠ হুলহামালে থেকে ৪১ জন অভিবাসী শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে। আরও বেশ কিছু জায়গা থেকে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সব মিলিয়ে গ্রেফতার সংখ্যা ৮০তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, অভিবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের বিষয়টি ঢাকার জন্য সরকার জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে। 

এইচআরডাব্লিউয়ের ডিরেক্টর প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেন, “বিক্ষোভ দমন বাদ দিয়ে, মালদ্বীপের কর্তৃপক্ষের উচিত এটা নিশ্চিত করা যাতে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত না হয়, যেটার কারণে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছে”।

পুলিশ বলেছে, তারা শ্রমিকদের বলেছে, ‘তারা যেন শিল্পাঞ্চলের সঙ্ঘাতের নাম দিয়ে সহিংসতায় জড়িয়ে না পড়ে”।

দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ পর্যটকদের আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে পরিচিত। করোনা ভাইরাস সংক্রমন ঠেকাতে মার্চ মাসে আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩,১৭৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং ১৫ জন মারা গেছে। 

আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগই বাংলাদেশী শ্রমিক, যারা সাধারণত রাজধানী মালেতে অত্যন্ত ঘিঞ্জি পরিবেশে বাস করে থাকে। 

১৫ জুলাই মালদ্বীপ তাদের আন্তর্জাতিক সীমান্ত খুলে দিয়েছে এবং দেশের বেশির ভাগ জায়গা থেকে লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে।