প্রতিরক্ষা তহবিল ঘাটতি মেটাতে বন্ড ছাড়তে পারে ভারত সরকার

প্রতিরক্ষা বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ভারত সরকার বন্ড ছাড়তে পারে। গত কয়েক বছর ধরে প্রতিরক্ষা বাহিনীর বাজেটে মারাত্মক ঘাটতি দেখা দেয়ায় মোদি সরকার এই উদ্যোগ নিতে পারে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক এক কর্মকর্তা পরামর্শ দিয়েছেন।
সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব জি মোহন কুমার বলেন, মূলধনী বাজেট হতে হবে অ-ক্ষয়যোগ্য, যাতে চলমান প্রকল্পগুলোতে তহবিল যোগান বন্ধ না হয়।
তিনি বলেন, এখন সামরিক বাজেট একটি সীমাবদ্ধ ফ্যাক্টর হয়ে পড়েছে। মূলধনী বাজেট সবসময় সামান্য পরিমাণে বাড়ছে। পাশাপাশি বাজেট কর্তন আরো অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছে।
২০১৫-১৭ মেয়াদে দায়িত্ব পালনকারি সাবেক এই সচিব বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের রাজস্ব যখন ভয়াবহ রকমের টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তখন প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধি প্রায় অসম্ভব মনে হচ্ছে। তাই প্রতিরক্ষাখাতে তহবিল প্রবাহ বাড়াতে সরকার জাতীয় প্রতিরক্ষা বন্ড ছাড়তে পারে।
কুমার বলেন, আত্মনির্ভরতা অর্জনের জন্য ভারতকে উচ্চপ্রযুক্তি খাতে পদচ্ছাপ সুদৃঢ় করতে হবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় সম্প্রতি ১০১টি সরঞ্জামের জন্য যে আমদানি নিষিদ্ধ তালিকা প্রকাশ করেছে তা নিয়েও কথা বলেন সাবেক এই সচিব।
তিনি বলেন, বহুমুখি কৌশল গ্রহণ করে অনেক আগেই আমাদের আন্তনির্ভরশীল হওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করা দরকার ছিলো। কোন বুলেট-প্রুফ ভেস্ট বা ইলেক্ট্রনিক ফিউজ তৈরি করা এক বিষয়, আর উচ্চপ্রযুক্তির সিস্টেম তৈরি করা আরেক বিষয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো প্রযুক্তি ও ইকোসিস্টেম তৈরি। এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত হিন্দুস্তান এরোনটিকস লি. পর্যন্ত ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করেনি।
কুমার বলেন, মৌলিক ভুল ছিলো আমরা বেসরকারি খাতকে অবহেলা করেছি।
গত মে মাসে মোদি সরকার প্রতিরক্ষা খাতে বেশ কিছু সংস্কারের কথা ঘোষণা করে। এই খাতে বিদেশী বিনিয়োগ সীমা বৃদ্ধি করে। অভ্যন্তরিণ নির্মাণশিল্প চাঙ্গা করতে আরো বেশি করে দেশীয় অস্ত্র ও প্লাটফর্ম কেনার কথা ঘোষণা করে।
চলতি মাসের গোড়ার দিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ১০১ সিস্টেমের তালিকা ঘোষণা করে যেগুলো আর আমদানি বন্ধ করা হবে না। মন্ত্রণালয় হিসাব করে দেখেছে এর ফলে আগামী ৫ বছরে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৪ ট্রিলিয়ন রুপির কন্ট্রাক্ট দেয়া যাবে। বিদেশী ও দেশী প্লাটফর্ম সংগ্রহের জন্য মূলধনী বাজেট আলাদা করা হয়েছে। এ বছর দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য ৫২ হাজার কোটি রুপি আলাদা করা হয়েছে।
তবে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয হলো প্রতিরক্ষা বাজেট সংকুচিত হতে থাকা। চলতি অর্থবছরে এই বাজেট ধরা হয়েছে ৪.৭১ ট্রিলিয়ন রুপি।
নয়া দিল্লীর ইন্সটিটিউট অব ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড এনালাইসিসের গবেষক লক্ষণ কুমার বেহেরা বলেন, গত সাত বছরে সম্পদ চাহিদা ও বরাদ্দের মধ্যে পার্থক্য ২০১৫-১৬ সালে যেখানে ছিলো ১৪% সেখানে ২০১৯-২০ সালে বেড়ে দাঁড়িছে ২৫%।