আমরা লাইভে English বৃহস্পতিবার, জুন ০১, ২০২৩

পাকিস্তান: আইএসআই সদর দফতরে সার্ভিস চিফদের বিরল বৈঠক, ভারতের অশুভ চক্রান্ত নিয়ে আলোচনা

REPORT-1-ENG-17-06-2020-Pak

পাকিস্তানের বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা মঙ্গলবার দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) সদর দফতরে এক বিরল বৈঠকে মিলিত হয়ে অধিকৃত কাশ্মির নিয়ে ভারতের অশুভ চক্রান্ত ও অন্যান্য আঞ্চলিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন। 

বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে আইএসপিআর বলে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ইস্যুগুলোর ব্যাপারে সেনা নেতৃবৃন্দকে বিস্তারিতভাবে অবহিত করা হয়। এতে এলওসি এবং ভারত অধিকৃত জম্মু-কাশ্মির পরিস্থিতির উপর বেশি মনযোগ দেয়া হয়। 

বৈঠকে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান (সিজেসিএসসি) জেনারেল নাদিম রাজা, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল জাফর মেহমুদ আব্বাসি ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মুজাহিদ আনোয়ার খান অংশ নেন। এছাড়া চিফ অব জেনারেল স্টাফ লে. জেনারেল শাহির শামশাদ মির্জাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

আইএসপিআর জানায়, সিজেসিএসসি ও বাহিনী প্রধানরা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য আইএসআই’র নিরলস প্রচেষ্টার প্রসংশা করেন এবং এর পেশাগত প্রস্তুতির ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

জাতীয় নিরাপত্তার ব্যাপারে আলোচনার জন্য আইএসআই সদর দফতরে সব সার্ভিস প্রধানদের মিলিত হওয়া একটি বিরল ঘটনা। সাধারণত তারা জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির বৈঠকে মিলিত হন। এটাই তিন বাহিনীর সর্বোচ্চ ফোরাম। ২০১৮ সালের জুলাইয়ের পর এ ফোরামের কোন বৈঠক হয়নি। সঙ্কটের সময় মূলত আন্ত:বাহিনী সমন্বয় নিশ্চিত করতে এই ফোরামের বৈঠক জরুরি হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ ‘সীমান্ত বিবাদ উসকে না দিয়ে’ ভারতকে নিজের দিকে তাকাতে পাকিস্তানের পরামর্শ

আইএসআই দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে ব্রিফিং দিয়ে থাকে। চলতি বছরেই দুবার আইএসআই সদর দফতর পরিদর্শনে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

তবে এবারের ব্রিফিংয়ের বিশেষ তাৎপর্য আছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির সময় এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হলো।

প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্ত বিরোধে জড়িয়ে পড়া, দুর্বল অর্থনীতি ও অবনতিশীল করোনা পরিস্থিতির মতো বহুরকম সঙ্কটে আটকা পড়েছে ভারত। সোমবার চীন-ভারতের মধ্যে যে সংঘাত হয় তাতে ১৯৭৫ সালের পর প্রথমবারের মতো হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে মোদি সরকার দেশে কঠিন অবস্থায় পড়েছে।

পাশাপাশি ভারত যে আতঙ্কজনক সামরিক শক্তিবৃদ্ধি করছে তা পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা নিয়ন্ত্রণ রেখায় অনুপ্রবেশ ঘটছে বলে একটি কাহিনী তৈরি করছে এবং প্রায় প্রতিদিনই অধিকৃত কাশ্মিরে স্বাধীনতকামীদের হত্যা করে তা ফলাও করে প্রচার করছে।

অনেকের আশঙ্কা ভারত সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক সংঘাত বাধানোর পরিবেশ তৈরি করছে।

তবে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা আইএসআই সদর দফতরে মঙ্গবারের বৈঠকের মতো ঘটনাগুলোকে ভারতের প্রতি সামরিক কৌশলগত ইংগিত বলে মনে করছেন।

একটি কূটনৈতিক সূত্র ইংগিত দিয়েছে যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তার চীনা প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। 

পাকিস্তানের কর্মকর্তারা এই ভেবে উদ্বিগ্ন যে ভারতের সঙ্গে এই মুহূর্তে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে তা আফগান শান্তির পথে অগ্রগতিকে নস্যাৎ করতে পারে।

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দোহায় কাবুল সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসবে তালেবান। আর এই আলোচনা আয়োজনে বড় ভূমিকা রেখেছে পাকিস্তান।