এখনই বোরকা নিষিদ্ধ করছে না শ্রীলঙ্কা

খুব শিগগিরই বোরকা নিষিদ্ধ করছে না শ্রীলঙ্কা সরকার। মঙ্গলবার সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, বোরকা পরিধান নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে সরকার সময় নেবে।
গত শনিবার শ্রীলঙ্কার জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী সারাথ উইরাসেকেরা বলেছিলেন, সরকার বোরকা নিষিদ্ধসহ হাজারেরও বেশি ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে যাচ্ছে।
শ্রীলঙ্কা সরকারের এই মন্ত্রী বোরকাকে ধর্মীয় চরমপন্থার প্রতীক হিসেবে জানিয়েছিলেন মন্ত্রীপরিষদে অনুমোদনের জন্য মুসলিম নারীদের সম্পূর্ণ মুখ ঢেকে রাখার পোষাক নিষিদ্ধের একটি পেপারে শুক্রবার তিনি স্বাক্ষর করেছেন। দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় এই আইন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগেকার দিনে মুসলিম নারী এবং তরুণীরা বোরকা পরতেন না। এটা সম্প্রতি উত্থান ঘটা ধর্মীয় চরমপন্থার একটি আলামত। আমরা নিশ্চিতভাবেই এটি নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছি।
মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে সরকারের মুখপাত্র কেহেলিয়া রামবুকওয়েলা বলেন, বোরকা নিষিদ্ধের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আলোচনা এবং ঐক্যমতের প্রয়োজন রয়েছে। পরামর্শ করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সুতরাং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সময় লাগবে।
শ্রীলঙ্কার বোরকা নিষিদ্ধের প্রস্তাবে উদ্বেগ জানান পাকিস্তানের একজন কূটনীতিক এবং জাতিসংঘের একজন বিশেষ দূত। শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত সাদ খাত্তাক এক টুইট বার্তায় বলেন, বোরকা নিষিদ্ধে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগবে। অন্যদিকে জাতিসংঘের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং স্বাধীনতা বিষয়কবিমেষ দূত আহমেদ সাহেদ এক টুইট বার্তায় বলেন, বোরকা নিষিদ্ধ করা আন্তর্জাতিক আইন এবং মুক্তভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
এর আগে ২০১৯ সালে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রীলঙ্কার একাধিক গির্জা এবং হোটেলে ইসলামি জঙ্গিদের বোমা হামলায় আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির পর মুসলিম নারীদের বোরকা পরিধান সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়।
গত বছর শ্রীলঙ্কা সরকার করোনায় মৃত মুসলিমদের লাশ বাধ্যতামূলকভাবে আগুনে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশনা জারি করেছিল। পরে দেশ ও বিদেশে প্রচণ্ড সমালোচনার পর চলতি বছর প্রত্যন্ত একটি দ্বীপে করোনায় মৃত মুসলিমদের দাফনের অনুমতি দেয়া হয়।
৭০ শতাংশের বেশি বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ শ্রীলঙ্কায় মোট জনসংখ্যার ৯ শতাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বী। দেশটিতে মোট ২ কোটি ২০ লাখ মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে। এছাড়া সংখ্যালঘু তামিল হিন্দু ধম্বাবলম্বী রয়েছে ১৫ শতাংশ।