শ্রীলঙ্কার চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও ইইউর উদ্বেগ
শ্রীলঙ্কার চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বৃটেন। আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে। এরপরেও ক্ষোভ কমেনি আন্দোলনকারীদের। তারা রাজাপাকসের পৈত্রিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসের কলম্বোর বাসভবনেও হামলার চেষ্টা করেছে তারা। দেশের বিভিন্ন স্থানে শাসক দলের কার্যালয়গুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার এমন বিশৃঙ্খল অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। এক টুইটে তারা বলে, আমরা শ্রীলঙ্কার চলমান সংকট নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষন করছি। সেখানে যে পরিস্থিতি চলছে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা সকল শ্রীলঙ্কানের কাছে আহ্বান জানাই, যাতে তারা একটি দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান খুঁজে পাওয়ায় মনোযোগী হয়। অপরদিকে শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বৃটিশ হাই কমিশনার সারাহ হালটন শ্রীলঙ্কার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যেনো কোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের উপরে হামলা না হয়
তাদের উপরে এতদিন যে আক্রমণ হয়েছে তার নিন্দাও জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটির চলমান সংকট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও। তারা সকল পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। এ নিয়ে শ্রীলঙ্কায় অবস্থিত ইইউ কার্যালয় একটি টুইট দিয়েছে। এতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে হওয়া হামলার তীব্র নিন্দা জানায় ইইউ। আমরা সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা দেয়ার আহ্বান জানাই সরকারের প্রতি। যারা আন্দোলনকারীদের উপরে হামলা করেছে তাদেরকে শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কাজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। ইতিহাসের সবথেকে ভয়াবহ সংকট পাড় করছে শ্রীলঙ্কা। রিজার্ভে কোনো অর্থ না থাকায় আমদানি ব্যহত হচ্ছে। চলছে খাদ্য ও তেলের ভয়াবহ সংকট। দ্রব্যমূল্যের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎও থাকছে না সেখানে। এমন পরিস্থিতিতে গত কয়েক মাস ধরেই ফুঁসছে দেশের সাধারণ মানুষ। তারা এই সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসে এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসেকে দায়ী করছেন। অবশেষে জনরোষের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি রাজাপাকসে পরিবারের সবাইকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। তারা শাসক দলের প্রায় এক ডজন এমপিদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।