আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মার্চ ২৮, ২০২৩

বিষাদের মধ্যে উজ্জ্বল আলো

Vista of views-14-07-2020

সম্প্রতি প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড অনুমান করেছে যে, বৈশ্বিক অর্থনীতি চলতি বছরে ৪.৯ শতাংশ হ্রাস পাবে। বিশেষ করে বৈশ্বিক ভোক্তা ও সেবার হার ধারণার চেয়েও বেশি কমে যাওয়ায় এবং বৈশ্বিক শ্রমবাজারের উপর মহাবিপর্যয়কর আঘাত আসার কারণে রিপোর্টে এ রকম ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। 

বিভিন্ন দেশকে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য বড় ধরনের পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে, এবং কিছু দেশ সেই পদক্ষেপ না নেয়ায় তাদেরকে মাশুল দিতে হচ্ছে। এ অবস্থায় বছরের প্রথমার্ধে সারা বিশ্বের অর্থনীতি ধারণার চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অর্থনীতির প্রত্যাবর্তন আগের অনুমানের চেয়ে ধীর গতিতে হচ্ছে এবং সেখানে আরও আঘাত আসার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় পুরো পরিস্থিতি অনেকটাই অন্ধকার মনে হচ্ছে। 

কিন্তু এই অন্ধকারের মধ্যেও একটা উজ্জ্বল বিন্দু রয়েছে। ‘বিনিয়োগ ও সেবা খাতে ধারণার চেয়েও দ্রুত ও জোরালোভাবে উঠে দাঁড়ানো’ চীনের অর্থনীতির ব্যাপারে আইএমএফ ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে, এটা চলতি বছরে আরও ১ শতাংশ বাড়বে। ফলে চীন হবে পৃথিবীর বড় অর্থনীতির একমাত্র দেশ, যারা চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। 

চীন সরকার যে তথ্য প্রকাশ করেছে, সেটার সাথে আইএমএফের ভবিষ্যদ্বাণী সামঞ্জস্যপূর্ণ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, উৎপাদন খাতের জন্য ক্রয় ব্যবস্থাপনা সূচক জুনে ৫০.৯ এ চলে গেছে। টানা চার মাস ধরে ৫০ এর উপরে রয়েছে এই সূচক। এর অর্থ হলো উৎপাদন খাতের সম্প্রসারণ হচ্ছে। রিয়েল স্টেট থেকে নিয়ে অবকাঠামো নির্মাণ, রেল পরিবহন থেকে নিয়ে এক্সপ্রেস ডেলিভারি – সব খাতেই তথ্য উপাত্তে দেখা যাচ্ছে সুপ্ত অবস্থা থেকে চীনা অর্থনীতি দারুণভাবে উঠে দাঁড়াচ্ছে। 

ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ায়, দরকারে লকডাউন আরোপ করে, এবং ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসার পর দ্রুত কাজ চালু করে এবং উৎপাদন কর্মকাণ্ড আবার চালু করে অল্প সময়ের মধ্যেই অর্থনীতিতে আবার গতি ফিরিয়ে আনতে পেরেছে চীন। এখানে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে, নজিরবিহীন সমস্যার মুহূর্তে চীনা অর্থনীতি কেমন প্রতিরোধ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। 

বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির মধ্যে ৩০ শতাংশের বেশি আসছে চীন থেকে। তাদের অর্থনীতির উত্থান থেকে এই আত্মবিশ্বাস জন্মাতে পারে যে বৈশ্বিক অর্থনীতিও তার পায়ের উপর উঠে দাঁড়াবে যদি বিভিন্ন দেশ তাদের ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে। 

সেটা করতে বিভিন্ন দেশকে সাহায্য করার জন্য ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক জরুরি মানবিক অভিযান শুরু করেছে চীন। ১৫০টি দেশ এবং চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সহায়তা দিচ্ছে তারা। সেই সাথে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের অভিজ্ঞতাও বিনিময় করছে তারা। 

বিচ্ছিন্ন করা বা বিশ্বের বাজার ও বাণিজ্যিক চেইনকে দুই ভাগে বিভক্ত করার আলোচনা বাদ দিয়ে বিভিন্ন দেশের উচিত চীনের সাথে মিলে মহামারী মোকাবেলায় কাজ করা। 

চীন তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে, এবং বাইরের বিশ্বের জন্য অর্থনীতি উন্মুক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। এবং তাদের সহযোগিতার দরজা সব দেশের জন্য খোলা রাখবে।