আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মার্চ ২৮, ২০২৩

বিপজ্জনক পথ

VISTA-ENG-02-11-2020

আবারো ইসলামফোবিয়ার আগুন জ্বালিয়ে জঘন্য ঘটনাপ্রবাহ সূচনা করে মুসলিম ও পাশ্চাত্য বিশ্বকে মুখোমুখি করিয়ে দেয়া হয়েছে। এবার আবারো মহানবী সা:-এর ধর্ম অবমাননামূলক ছবি প্রকাশিত হয়েছে ফ্রান্সে। ফ্রান্সের শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষকের এসব ছবি নতুন করে তৈরী ও প্রদর্শনের পর ওই শিক্ষক খুন হয়েছেন, নাইসের চার্চে আরেক হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিতর্কের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর যুদ্ধংদেহী গলাবাজি উপকারে লাগেনি। রাষ্ট্রনায়োকোচিতভাবে সমস্যাটি সমাধান করার বদলে মি. ম্যাক্রোঁ  ইসলামের সামনে থাকা ‘সঙ্কট’ নিয়ে নব্য-উপনিবেশিক কায়দায় সামনে এসেছেন।

এর ফলে মুসলিমবিশ্বের কোনো কোনো স্থান থেকে কিছু প্রশ্নবোধক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এক ব্লগ পোস্টে লিখেছেন যে মুসলমানদের ক্রুদ্ধ হওয়ার এবং অতীতের হত্যাযজ্ঞের জন্য লাখ লাখ ফরাসিকে হত্যা করার অধিকার রয়েছে। কোনো সিনিয়র রাষ্ট্রনায়কের কাছ থেকে এ ধরনের প্রতিক্রিয়ায় ভ্রূকুঞ্চিত হবেই। ক্রমবর্ধমান সঙ্কটে আমাদের নিজেদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া বিচক্ষণ; ইমরান খান অমুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে ইসলামফোবিয়া সম্মিলিতভাবে মোকাবেলার জন্য মুসলিমবিশ্বের মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন।

বস্তুত, অমুসলিম নেতাদের মধ্যে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বাড়তে থাকা এই সঙ্কটে খুবই ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার কথা বলেও জানিয়েছেন, এটি ‘সীমাহীন হতে পারে না। এবং নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায়কে নির্বিচারে ও অপ্রয়োজনে আঘাত করা উচিত নয়’। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জটিল বিষয় সহানুভূতির সাথে কিভাবে সামাল দিতে হয়, তা মি. ট্রুডোর কাছ থেকে শিখতে পারেন।

বস্তুত, বাড়তে থাকা বিভেদসূচক গলাবাজি ও চরমপন্থা প্রতিরোধের জন্য ইসলামি বিশ্ব ও পাশ্চাত্য- উভয়পক্ষের কাছ থেকেই প্রয়াস প্রয়োজন। পাশ্চাত্যের অনেকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ছদ্মাবরণে ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র ব্যক্তিত্বকে অব্যাহতভাবে আক্রমণ করার পথই গ্রহণ করেছেন। যারা এটাকে সমর্থন করেন, তারা প্রাচ্যবাদের কুৎসিত ইতিহাস ও পরের উপনিবেশিকবাদকে (এই দুটি পর্যায়ে ইসলাম অব্যাহতভাবে আক্রান্ত হয়েছে) অগ্রাহ্য করছেন। মনে হচ্ছে, তথাকথিত সেক্যুলারবাদের ছদ্মাবরণে পুরনো গোত্রীয়, ধর্মীয় ঘৃণা আবার জেগে ওঠেছে। খুনের সাফাই কখনো গাওয়া না গেলেও এ ধরনের উস্কানি অব্যাহত থাকলে চরমপন্থীরা সহিংসতা চালাতে আগ্রহী রিক্রুটদের খুঁজে নেয়ার কাজটি করা অব্যাহত রাখবে।

পাশ্চাত্য যুদি হলোকাস্টের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা নিষিদ্ধ করতে পারে, তাহলে নিশ্চয় তারা শতাধিক কোটি লোকের বিশ্বাসের ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালানোর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।