আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মার্চ ২৮, ২০২৩

মাহাথিরের নতুন দলের কঠিন অভিযাত্রা

af_mahathir_110820
তুন ড. মাহথির

নতুন রাজনৈতিক দল করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী তুন ড. মাহাথির মোহাম্মদ। এতে মনে হয় এই নবতিপর নেতা এখনো তেজে ভরপুর। তবে তার নতুন দল আসলেই কিছু করতে পারবে কিনা তা দেখার ব্যাপার আছে।

‘শেরাটন ক্যু’র পর মাহাথিরপন্থী পিপিবিএম নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তখন থেকে তারা সংগ্রাম চালিয়ে যেতে একটি রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

বিষয়টিকে তারা আদালতে নিয়ে যান। কিন্তু কয়েক দিন আগে তাদের আপিল সেখানে আটকে যায়। এর মানে হলো মাহাথির আর আগের দলে ফিরতে পারছেন না এবং তাকে তার এজেন্ডা এগিয়ে নিতে হলে নতুন দল গঠন করতে হবে।

ড. মাহাথির ও তার ছেলে মুখরিজের নেতৃত্বাধিন নতুন দল হবে একটি মালয় দল। ফলে এরই মধ্যে জনাকীর্ণ মালয় রাজনীতির ময়দানে নতুন দলটি কতটুকু জায়গা করে নিতে পারবে তা দেখার বিষয়।

এই মুহূর্তে মালয় ভোট বিভক্ত হয়ে আছে উমনো, পার্টি ইসলাম সে মালয়েশিয়া (পাস), কিয়াদিলান, পার্টি প্রিবুমি বেরসাতু মালয়েশিয়া (পিপিবিএম) ও আমানাহ’র মধ্যে। ফলে এত বেশি প্রতিষ্ঠিত দলের মধ্যে নতুন দল গঠন করে নিজের জায়গা করে নেয়া ড. মাহাথিরের জন্য অসম্ভবরকম কঠিন কাজ হবে।

আবার মাহাথিরের নতুন দল কি করতে পারবে সে বিষয়ে কিছু অনুমান করারও সময় আসেনি। তবে এটা ঠিক, এই ২০২০ সালেও তিনি সম্প্রদায়গত রাজনীতির পেছনে বেশি শক্তি ব্যয় করছেন, যা তাকে জনগণের রোষানলে নিক্ষেপ করেছে।

সম্প্রদায়-ভিত্তিক রাজনীতি দেশকে বেশিদূরে নিয়ে যেতে পারবে না। কারণ এটি একটি বহুজাতিক দেশ এবং তাকে চূড়ান্তভাবে প্রগতিশীল বহুজাতিক রাজনীতিকে আলিঙ্গন করতে হবে। এই রাজনীতি বহুদিন ধরে সম্প্রদায়গত রাজনীতির চোরাবালিতে টিকে থাকার সংগ্রাম করছে। 

২০২০ সালে শুধু একটি গ্রুপের স্বার্থে নতুন দল গঠন করার মানে কিছু রাজনীতিকের মানসিকতা এখনো বিগত শতাব্দিতে আটকে আছে। 

দুঃখের বিষয় হলো তুন ড. মাহাথির ২০২০ সালেও বাংসা মালয়েশিয়ার ভিশনের রূপরেখা তৈরি করছেন!

হ্যা, তার নিজস্ব রাজনৈতিক বিবেচনা থাকতেই পারে, এবং তার বড় টার্গেট এখন পিপিবিএম।

ড. মাহাথিরের ঘোষণার পর পিপিবিএম নেতা ও সদস্যদের পদত্যাগের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্যে সুপিম কাউন্সিল সদস্য এ কাদির জাসিনও রয়েছেন। আরো আছেন তারিক ইসমাইল ও উলিয়া আকামাহ, জেরাম সাংসদ মোহাম্মদ শহিদ রসলি ও কেলাং বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ আবদিল্লাহ সাইদ আবদুল আজিজ এবং তার সঙ্গে বিভাগের এক হাজারের বেশি সদস্য। সিম্পান রেঙ্গাম ও লঙ্কাভি ডিভিশনেও এই গণপদত্যাগের ঘটনা ঘটছে।

এর মানে হলো সাবেক প্রধানমন্ত্রী এখনো পিপিবিএম-এর উপর কিছুটা প্রভাব রাখেন। তবে এটা দলটির ভিত্তিকে নাড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ঠ নয়। 

মাহাথিরের নতুন দলের জন্য প্রথম চ্যালেঞ্জটি বেশি দূরে নয়: স্লিম উপ-নির্বাচন। আসনটি রক্ষার জন্য উমনো প্রার্থী দেবে। পাকাতান হারাপান চাইবে আসনটি মাহাথিরের দলকে এনে দিতে।

মালয় রাজনীতিতে মাহাথিরের প্রভাবের লিটমাস পরীক্ষা হবে এই উপনির্বাচন। এই পরীক্ষায় হেরে গেলে নতুন দলের ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকারাচ্ছন্ন।

দুইবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে বহু রাজনৈতিক মিরাকল দেখিয়েছেন মাহাথির। তবে দুর্ভাগ্য হলো, আজকের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে একটি নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন করে নিজের রাজনৈতিক জীবনকে দীর্ঘায়িত করা তার জন্য একেবারে অসম্ভব না হলেও সহজ হবে না।