আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মার্চ ২৮, ২০২৩

এক-চীন নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে আগুন নিয়ে খেলছে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা

VISTA-ENG-16-06-2020

চীন-ভারত সীমান্ত বিবাদের মধ্যে কিছু ভারতীয় বিশেষজ্ঞ শুক্রবার এক ওয়েবিনারে পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভারতের উচিত এক-চীন নীতিকে পুনর্বিবেচনা করা। সাবেক ভারতীয় ডেপুটি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অরবিন্দ গুপ্তসহ কিছু কট্টর ভারতীয় বিশেষজ্ঞ এই ধারণাটা তুলে ধরেছেন যে, ভারতের উচিত হংকংয়ের ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনে’ সমর্থন দেয়া, তাইওয়ানের সাথে ভারতের ‘অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সম্পর্ক’ বাড়ানো, ‘চীনা নেতাদের ভারত সফরকালে’ পরোক্ষভাবে তিব্বতের জনগণকে ‘বিক্ষোভ করার ব্যাপারে’ সাহায্য করা এং হংকং ও তাইওয়ানকে সদস্য না করা হলে রিজিওনাল কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপের সাথে যুক্ত হতে অস্বীকার করা। 

এই ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা কি মনে করে যে, তারা এমন কিছু নীতি বাতলে দিয়েছেন, যেগুলো ব্যবহার করে চীনের বিরুদ্ধে শক্তি বাড়াতে পারবে নয়াদিল্লী?

এই সব কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের কৌশলগত ভিশনের ঘাটতি রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এক-চীন নীতিটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত এবং চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য এটার স্বীকৃতি দেয়াটা একটি পূর্বশর্ত। কিন্তু কিছু কট্টর ভারতীয় বিশেষজ্ঞ ও মিডিয়া মনে হচ্ছে এটাকে ভেঙ্গে দিতে চায়। এই কট্টরপন্থীরা আসলে ভারতকে উসকানি দিচ্ছে যাতে ভারত চীনের মূল ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার মাধ্যমে আগুন নিয়ে খেলতে নামে। তাছাড়া আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার ক্ষেত্রে চীনের সক্ষমতার বিষয়টি নিয়েও তাদের ভুল ধারণা রয়েছে। তারা চীনের মূল স্বার্থের জায়গাটিতে আঘাত দিতে চায়, কিন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এক-চীন নীতির ব্যাপারে ভারত সরকারের অবস্থান বদলের সম্ভাবনা কম। 

আরও পড়ুনঃ সীমান্তে শান্তির জন্য চীনের ব্যাপারে পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করা উচিত ভারতের

১৯৫০ সালে যখন ভারত আর চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়, তখনই এক-চীন নীতির স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত। এক-চীন নীতিকে চ্যালেঞ্জ করে চীনকে উসকানি দেয়া হলে, সেটা ভারতের স্বার্থের  জন্যই খারাপ হবে। ভারত সরকারের ব্যাপারে আশা করা যায় যে, এই ধরণের নেতিবাচক মানসিকতার কারণে তারা চীন-ভারত সম্পর্ককে নষ্ট করবে না এবং দুই দেশের মধ্যে বিবাদ আরও বাড়াবে না। 

কিছু দেশের সরকার তাইওয়ান ও তিব্বত ইস্যুসহ চীনের মূল স্বার্থের জায়গায় চীনকে উসকানি দিতো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সরকারগুলো বুঝতে পেরেছে যে, চীন এ ব্যাপারে অত্যন্ত দৃঢ় এবং কোন কিছুর বিনিময়েই তারা তাদের মূল স্বার্থ ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিষয়টিতে ছাড় দেবে না। নিজেদের মূল স্বার্থ রক্ষার জন্য চীনের যথেষ্ট ইচ্ছা ও সামর্থ রয়েছে। কিছু ভারতীয় স্কলারদের এই বিষয়টি ভালোভাবে বোঝা উচিত। 

ভারতের নিজের দেশেও বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি রয়েছে। আসলে, বহু উন্নয়নশীল দেশই এই বিচ্ছিন্নতাবাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। ভারতের কৌশলগত বিশেষজ্ঞদের এ ব্যাপারে গভীর উপলব্ধি থাকা উচিত এবং অন্য দেশে বিচ্ছিন্নতাবাদ উসকে দেয়াটা তাদের উচিত নয়। চীনের উত্থানের কারণে কিছু ভারতীয় বিশেষজ্ঞের চীনের সম্পর্কে সন্দেহও বাড়ছে। পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য তাদের উচিত চীনা বিশেষজ্ঞদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা।