আমরা লাইভে English শনিবার, জুন ০৩, ২০২৩

ইরানের সঙ্কট

VISTA-ENG-23-03-2020

কোভিড-১৯ বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত কিছু দেশের স্বাস্থ্যসেবা সিস্টেমকেও একটা প্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। সরকার ও মেডিকেল পেশাদাররা সেখানে রোগ প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে এবং রোগির সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

এদিকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে এই হুমকির মাত্রা আরও বেশি। এ সব দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যে অবস্থা, তাতে এখানে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া না হলে বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।

এই পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সব রাষ্ট্রগুলোকে এখন তাদের সাধারণ মতবিরোধ দূরে সরিয়ে রেখে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় একজোট হতে হবে, যে ভাইরাস কারো মধ্যে কোন পার্থক্য করে না।

তবে, এটা স্পষ্ট যে, কিছু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় জোর করে এমন কিছু পদক্ষেপ চাপিয়ে দিচ্ছে, যেগুলোকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় না।

উদাহরণস্বরূপ যুক্তরাষ্ট্রের কথা বলা যায়। ইরান এই ভাইরাসের দ্বারা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্র তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি।

ইরান বিষয়ক ওয়াশিংটনের পয়েন্ট ম্যান ব্রায়ান হুক বলেছেন, “আমাদের নীতি হলো এই দেশের সরকারের উপর সর্বোচ্চ চাপ দেয়া”।

এমনকি স্বাভাবিক সময়েও এটা বলা যায় যে, ইরানের উপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ভুল ও অযৌক্তিক।

কিন্তু তেহরান যখন মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে আছে, এ অবস্থায় তাদের উপর চাপ বাড়ানোটা যুক্তরাষ্ট্রের কোন অবস্থাতেই উচিত নয়।

ইরানের ভেতর থেকেও এমনকি এই যথার্থ সমালোচনাটা রয়েছে যে, কর্তৃপক্ষ আক্রান্ত ও মৃতের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ করছে না।

এটা সত্য যে, সরকার যদি পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও স্বচ্ছ হতো তাহলে কোভিড-১৯ যখন প্রথম ছড়াচ্ছিল, তখন এটার মোকাবেলা করাটা আরও সহজ হতো।

তবে, এখন এটা একটা একাডেমিক আলোচনায় পরিণত হয়েছে। ভাইরাস মোকাবেলার জন্য ইরানের জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

ইরানে এ পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ মানুষ মারা গেছে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রতি ঘন্টায় সেখানে ৫০ জনের মতো মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে।

এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি বিশ্ব নেতাদের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন, যাতে তারা ইরানের প্রতি ‘সর্বোচ্চ সমবেদনা’ জানান এবং তাদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন।

চীন – যেখান থেকে এই রোগের সূত্রপাত, তারাও মানবিক কারণে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

ইরানের সাথে আমেরিকার মতপার্থক্য ভূরাজনৈতিক ও আদর্শগত এবং এটা বহু দশক ধরে চলে আসছে।

তবে, এই সময়টাতে বিভিন্ন দেশকে এই ধরনের সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং সম্পূর্ণ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ইরানে এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, সেটার দাবি হলো বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখন একসাথে এই ভাইরাস মোকাবেলার জন্য কাজ করতে হবে এবং সেখানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সেখানে জীবন রক্ষা করা যায়।

রাজনীতি অন্য সময়েও করা যাবে।