হংকংকে এখনই হিসেব থেকে বাদ দেয়ার সময় আসেনি

হংকংয়ে জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকরের যে সব প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, সেখানে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক ও পরিবহনের কেন্দ্র হিসেবে এই শহরের সম্ভাবনাকে অনিশ্চিত হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু বেইজিংয়ের পদক্ষেপের দুটো দিকই রয়েছে, এবং অনেকেই বলেছেন এবং এই শহরের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করার এখনও সময় আসেনি।
কানাডাকে অনুকরণ করে অস্ট্রেলিয়াও এই শহরের সাথে বহিঃসমর্পণ চুক্তি বাতিল করেছে এবং সেখানকার শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও ভিসার মেয়াদ বাড়ানোসহ তাদের জন্য নাগরিকত্বের পথ সহজ করছে।
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, অনেকের চোখেই হংকং তাদের সুনাম হারাচ্ছে। বিশেষ করে তাদের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা এবং বৈশ্বিক আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ওয়াশিংটন যদিও এই শহরের বিশেষ বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সুবিধা বাতিল করেছে, কিন্তু এটা বলা যেতে পারে যে, এর পরও হংকং অর্থনৈতিক কেন্দ্র এবং জনগণের বিচরণের জন্য আকর্ষণীয় কেন্দ্র হিসেবেই থেকে যাবে।
তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ ‘ফাইভ আইজ’ ইন্টেলিজেন্স কমিউনিটির অন্যান্য দেশের সাথে মাদক পাচার, মানি লন্ডারিং, এবং এমনকি সন্ত্রাসবাদ দমনের জন্য আইন প্রয়োগ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে হংকংয়ের। বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে এই শহর আসলেও আমেরিকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ বিন্দু হিসেবে কাজ করে আসছে।
জাতীয় নিরাপত্তা আইনের কারণে হংকং চীনের মূল ভূখণ্ডের অন্য যে কোন শহরের মতো হয়ে যাবে বলে যে আশঙ্কা ব্যক্ত করা হচ্ছে, সেটা অনেকটাই অতিরঞ্জিত। নতুন আইন হয়তো অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, কিন্তু এর কারণে সেখানকার বিচার ব্যবস্থা মূল ভূখণ্ডের মতো হওয়ার কোন কারণ নেই।
যে সব দেশ ফাইভ আইজ – যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, এবং নিউ জিল্যাণ্ডের উদাহরণ অনুসরণ করছে, তাদের দ্বিতীয়বার ভেবে দেখা উচিত।
বৈশ্বিক আইন প্রয়োগ ব্যবস্থাকে খণ্ড খণ্ড করে ফেলা হলে বৈশ্বিক অপরাধের আরও বেশি সুযোগ তৈরি হবে। এটা দেখার বিষয় যে, হংকংয়ের গুরুত্ব কমে যাওয়ার ব্যাপারে যে সব অনুমান করা হচ্ছে, সেটা দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকে কি না। চায়না ব্যাংকিং রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান লিউ মিংকাং যেমনটা বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র হিসেবে হংকং এখনও নিউ ইয়র্ক আর লন্ডনের পাশাপাশিই থাকবে।
চায়নিজ ইউনিভার্সিটির শেনজেন ফিনান্স ইন্সটিটিউট আয়োজিত এক ফোরামে তিনি বলেন যে, বাকি বিশ্বের সাথে সংযোগের জন্য হংকং এখনও চীনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক প্রবেশদ্বার হিসেবেই টিকে থাকবে।