নতুন প্রদেশের পরিকল্পনা

দক্ষিণ পাঞ্জাবে নতুন প্রদেশ সৃষ্টির একটি সরকারি পরিকল্পনা ঘোষণা ধামাচাপা পড়ে গেছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায়। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রশাসনের অস্পষ্ট কৌশল প্রশ্নে উদ্বেগ ব্যাপক। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এতে দক্ষিণ পাঞ্জাব সৃষ্টির গণদাবি পূরণে পিটিআইয়ের একটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগের কথা বলা হয়। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করতে সরকারকে পরামর্শ দিতে গঠিত একটি কমিটির এক বছরের বেশি সময় ধরে আলোচনার পর পরিকল্পনাটি তৈরী করা হয়েছে। তবে পরিকল্পনাটি রূপরেখা পর্যায়েই আছে বলা যায়। এখন পর্যন্ত যে পরিকল্পনার কথা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে সরকার প্রথম পর্যায়ে পুলিশের একজন অতিরিক্ত আইজি ও একজন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব নিয়োগের মাধ্যমে ‘পৃথক’ প্রশাসনিক অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু করতে চায়। এসব নিয়োগের পর নতুন প্রশাসনিক ও আইনগত অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনা হবে।
পাঞ্জাবের দক্ষিণ দিকে অঞ্চলগুলোকে নিয়ে আলাদা প্রদেশ গঠনের চেষ্টা এটাই প্রথম নয়। অনেক দিন ধরেই পাকিস্তানের অন্যতম দরিদ্র ও অনুন্নত অঞ্চল দক্ষিণ পাঞ্চাবে আলাদা প্রদেশ গঠনের দাবি রয়েছে। পিপিপি ও পিএমএল-এন সাম্প্রতিক সময়ে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বঞ্চনার সুযোগটি গ্রহণ করতে চেয়েছে তাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করে পার্লামেন্টে কিছু প্রস্তাব এনে। কিন্তু কোনো দলই এ নিয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমঝোতা প্রতিষ্ঠার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।
পিটিআই তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চেয়ে ভালো নয়। তারা দলের মধ্যে এ নিয়ে বৃহত্তর বিতর্ক শুরু করা এড়িয়ে গেছে, বিরোধী দলের মতামত নিতে যায়নি। বিশেষ করে পিএমএল-এনের কথা বলা যায়। এই দলটি দক্ষিণ পাঞ্জাবে দুটি প্রদেশ গঠন করতে চায়। একটি হবে আগের বাহওয়ালপুর রাজ্যের অধীনস্ত এলাকা নিয়ে, অপরটি ডি জি খান ও মুলতান বিভাগগুলোকে নিয়ে। পুরো দক্ষিণ পাঞ্জাব প্রদেশটির পরিকল্পনা দৃশ্যত ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক বাগাড়ম্বড়তার অংশে পরিণত হয়েছে। তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়টি কিভাবে সুরাহা করা হবে, সে ব্যাপারে তারা কিছু বলেনি। পাঞ্জাবের মতো প্রদেশকে দুই বা তিনটি ইউনিটে ভাগ করার কাজ সহজ নয়। এটি কেবল আইন প্রণয়ন, প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয়ের সাথেই সম্পৃক্ত নয়, এতে স্পর্শকাতর অনেক বিষয় আছে। বিশেষ করে কেন্দ্রের সাথে প্রদেশগুলোর ও প্রদেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কে বিষয়গুলো মীমাংসা করতে হবে। এ কারণে বিরোধীদের সাথে অর্থপূর্ণ সংলাপ শুরু করা দরকার পিটিআইয়ের। তাদের আরো প্রয়োজন এই ইস্যুতে পার্লামেন্টারি বিতর্কের আয়োজন করা এবং পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করার আগে ওই অঞ্চলের জনগণ তথা সত্যিকারের সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে সামিল করা।