আমরা লাইভে English মঙ্গলবার, মে ৩০, ২০২৩

ট্রাম্প: সঙ্কটের সুযোগ কেন নেবেন না?

VISTA-ENG-24-04-2020

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য যখন পরিস্থিতি ভালো যাচ্ছেনা, তখন তার কৌশল হলো আলোচনার বিষয় বদলে দেয়া যেটা তার সমর্থকদের উজ্জীবিত করবে আর তার সমালোচকদের চরম ক্ষুব্ধ করবে। বুধবার ট্রাম্প ‘দেশে অভিবাসন বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন’, সেটাকে ঠিক এ ধরনেরই একটা সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখা যায়। 

প্রেসিডেন্ট সোমবার টুইটারে প্রথম এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারে তার আগ্রহের কথা প্রকাশ করে বলেন যে, ‘অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে রক্ষার জন্য’ এবং ‘গ্রেট আমেরিকান নাগরিকদের কর্মসংস্থান রক্ষার জন্য’ এ সিদ্ধান্ত নেয়াটা জরুরি। ডেমোক্র্যাটরা যথারীতি তার সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং অভিযোগ করেছে যে, মহামারী মোকাবেলায় সরকার যেভাবে ব্যর্থ হয়েছে, সেখান থেকে মনোযোগ সরানোর জন্যই এটা করা হয়েছে। 

এর সাথে অন্যান্য বিষয়ও রয়েছে। জাতিকে রক্ষার নামে ট্রাম্প প্রশাসন বৈধ অভিবাসনও বন্ধ করে দিয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কঠিন সফর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং ভিসা প্রক্রিয়াজাত বন্ধ করে দেয়া হযেছে। কোন ভিসা সাক্ষাতকার নেয়া হচ্ছে না এবং নাগরিকত্বের কোন অনুষ্ঠানও হচ্ছে না। সীমান্ত পার হয়ে আসা অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে এবং কম বয়সী বা আশ্রয় প্রার্থীরা কোন সুরক্ষা পাচ্ছে না। 

ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন যে, ৬০ দিনের জন্য গ্রিন কার্ড দেয়া বন্ধ থাকবে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সেটার সময় বাড়ানো হতে পারে। ব্যবসায়ীদের দিক থেকে প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় অতিথি কর্মী কর্মসূচি বন্ধ করা হয়নি। মওসুমি ফার্ম কর্মী এবং এইচ-১বি ভিসাধারীদের কাজে কোন ব্যাঘাত ঘটবে না। 

অভিবাসন বন্ধ করাটা ট্রাম্প প্রশাসনের দীর্ঘদিনের এজেন্ডা, যেটা মহামারী মোকাবেলার নামে এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সঙ্কটের মধ্যে প্রশাসন এখন কোভিডের বাইরের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যে বিষয়গুলো নিয়ে স্বাভাবিক সময়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হতো। 

এমনিতে মহামারীর সময়ে ট্রাম্পের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার মধ্যে কোন সমস্যা নেই। বা এগুলোকে নিজের স্বার্থে তিনি ব্যবহারও করতে পারেন। অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা করোনা ভাইরাসকে তাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছেন। স্বাস্থ্য খাতের পুনর্গঠন থেকে পেইড ফ্যামিলি লিভ ও মেইলে ভোট দেয়ার ইস্যুগুলো নিয়ে তারা কাজ করছেন। সাবেক হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ রাহম এমানুয়েল ২০০৯ সালের আর্থিক সঙ্কটের সময়ে বিখ্যাত একটি মন্তব্য করেছিলেন, “ভালো একটা সঙ্কটকে কখনও অপচয় করো না। যে কাজগুলো করাটা একসময় অসম্ভব মনে হয়েছিল তোমার, এই সঙ্কটকালে সেরা করে নাও”।

কিন্তু এই প্রেসিডেন্ট বারবার যে কোন সুযোগকে কাজে লাগানোর আগ্রহ দেখিয়েছেন। এমনকি দরকারে নিজে তিনি সে ধরনের সুযোগ তৈরিও করেছেন, যাতে তার কর্তৃত্ব প্রসারিত করা যায় এবং নিজের স্বার্থ এগিয়ে নেয়া যায়। উদাহরণ হিসেবে পেন্টাগনের বাজেটে বহু বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের বিষয়টি স্মরণ করা যেতে পারে, দক্ষিণ সীমান্তের ছোট্ট একটা অংশে দেয়াল নির্মাণের জন্য যে বাজেট গ্রহণ করা হয়েছিল। আর এটা করা হয়েছিল জাতীয় জরুরি পরিস্থিতির অজুহাত দিয়ে। প্রেসিডেন্টের টুইট এবং ব্রিফিংগুলো যদিও সংবাদ মাধ্যম ও জনগণের মনোযোগ বিভ্রান্ত করার পদ্ধতি মাত্র, তবে, ট্রাম্প প্রশাসন চুপি চুপি যে সব কাজ করছে, বিশেষ করে এই বৈশ্বিক সঙ্কটের সময়ে, সেদিকে কড়া নজর রাখা প্রয়োজন।